প্রকাশ :
২৪খবর বিডি: 'পবিত্র হজের তিনটি ফরজ বা অবশ্যপালনীয় কাজের একটি হলো ৯ জিলহজ সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত আরাফাতের ময়দানে অবস্থান করা। মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) আরাফাতে অবস্থানকেই হজ বলে উল্লেখ করেছেন। সে জন্য আজ শুক্রবার সূর্যোদয়ের পর থেকে লাখ লাখ মুসল্লি 'লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক, লাব্বাইকা লা শারিকা লাকা লাব্বাইক। ইন্নাল হামদা ওয়া নি'মাতা লাকা ওয়াল মুলক, লা শারিকা লাক' বলতে বলতে মিনা থেকে ১৫ কিলোমিটার দূরে আরাফাতের ময়দানে সমবেত হবেন। এখানে দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত অবস্থান করা ওয়াজিব।'
'দুই মাইল দৈর্ঘ্য ও দুই মাইল প্রস্থের পাহাড়বেষ্টিত আরাফাতের ময়দানটি সমতল একটি এলাকা। এর তিন দিক ঘিরে থাকা পাহাড়গুলোর একটি হলো জাবালে রহমত বা রহমতের পাহাড়। বলা হয়ে থাকে, পৃথিবীতে আসার পর হজরত আদম (আ.) ও হজরত হাওয়া (আ.)-এর দেখা হয়েছিল এই পাহাড়ে। তা ছাড়া এই পাহাড়ের কাছে দাঁড়িয়েই হজরত মুহাম্মদ (সা.) বিদায় হজের ভাষণ দিয়েছিলেন।'
'আরাফাতের ময়দানে খুতবা দেওয়া হয়। এখানে হাজিরা জোহর ও আসরের নামাজ পড়বেন। তবে সন্ধ্যা পর্যন্ত অবস্থান করলেও সেখানে তাঁরা মাগরিবের নামাজ আদায় করবেন না; বরং প্রায় ৮ কিলোমিটার দূরে মুজদালিফায় গিয়ে মাগরিব ও এশার নামাজ একসঙ্গে আদায় করবেন। এরপর রাতে খোলা মাঠে অবস্থান করবেন। এবার হজে অংশ নিচ্ছেন সাড়ে আট লাখ বিদেশিসহ ১০ লাখ মুসল্লি। মহামারির আগে প্রায় ২৫ লাখ মুসল্লি হজে যেতেন।'
-সেখানে অবস্থানকালে শয়তানের প্রতিকৃতিতে পাথর নিক্ষেপের জন্য তাঁরা ৭০টি পাথর সংগ্রহ করবেন। পরদিন ফজরের নামাজ আদায় শেষ করে হাজিগণ মুজদালিফা থেকে আবার মিনায় নিজেদের তাঁবুতে ফিরে যাবেন। তারপর মিনার জামরায় বড় শয়তানকে সাতটি পাথর নিক্ষেপ করে পশু কোরবানি দিয়ে মাথা ন্যাড়া করে গোসল করবেন এবং সেলাইবিহীন দুই টুকরা কাপড় ছেড়ে স্বাভাবিক পোশাক পরে মিনা থেকে মক্কায় গিয়ে পবিত্র কাবা শরিফ সাতবার তাওয়াফ করবেন।
'লাব্বাইক লাব্বাইক' ধ্বনিতে মুখর হবে আরাফাত ময়দান
'চলতি বছর পবিত্র শুক্রবার আরাফার দিন হওয়ায় হাজিরা এবারের হজকে নিজেদের জন্য সৌভাগ্যের বলেই মনে করছেন। কারণ, মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) এমন এক শুক্রবারই আরাফাতের ময়দানে উপস্থিত হয়ে ঐতিহাসিক বিদায় হজের ভাষণ দিয়েছিলেন। এ কারণে শুক্রবারের হজ আকবরি হজ বা বড় হজ হিসেবে বেশি পরিচিত।'
'আজ আরাফাতের ময়দানে সমবেত হবেন- এই আনন্দে কেঁদে ফেলেন গাইবান্ধা থেকে আসা অবসরপ্রাপ্ত ব্যাংকার জাহিদুল ইসলাম। তিনি বলেন, 'হজের জন্য ২০১৯ সালে নাম নিবন্ধন করেছিলাম। কিন্তু করোনার কারণে হজ পালনের সুযোগ পাইনি। দুই বছর অপেক্ষার পর এবার আমি সুযোগ পেয়েছি। আমার পরিচিত কয়েকজন নিবন্ধন করেও হজ করতে পারেননি। কারও কারও মৃত্যুও হয়েছে। এমন পরিস্থিতির মধ্যেও হজ পালনের সুযোগ পেয়ে রাব্বুল আলামিনের দরবারে লাখো কোটি শুকরিয়া জানাই।''